বাংলাদেশকে বলা হয় কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের বেশির ভাগ লোক গ্রামে বাস করে। আর কৃষিই তাদের জীবিকার প্রধান উপায়। এছাড়াও গ্রামাঞ্চলে কিছু লোক যেমন- তাঁতি, জেলে, কুমার, কামার, মুদি দোকানদারও ছোটখাটো ব্যবসা করে জীবন ধারণ করে। শহরাঞ্চলের মানুষ প্রধানত চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য করে। এছাড়াও শহরে বহু লোক রিক্সা, ঠেলা ও ভ্যানগাড়ি চালক, মুটে, মজুর, ছোট দোকানদার ও ফেরিওয়ালা ইত্যাদি হিসাবে জীবন ধারণ করে। এসব কাজ হয় ব্যক্তি উদ্যোগে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মালিকানায়ও এদেশে কিছু কিছু শিল্পকারখানা এবং রেল, সড়ক ও নৌপরিবহন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক খাতও রয়েছে। বর্তমানে বেসরকারি মালিকানায় দেশে অনেক শিল্পকারখানা ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। দেশের উন্নয়নে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তাছাড়া বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে এই খাত থেকে। এভাবে সরকারি ও বেসরকারি দুই খাতকে নিয়েই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক জীবনধারা বিকশিত হচ্ছে।
এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি), মোট জাতীয় উৎপাদন (জিএনপি) ও মাথাপিছু আয়ের ধারণা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করতে পারব;
মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) যেসব খাত অবদান রাখছে তা বর্ণনা করতে পারব;
মানব সম্পদ উন্নয়নের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব ;
বাংলাদেশে মানব সম্পদ উন্নয়ন পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে পারব এবং অন্যান্য দেশের মানব সম্পদ উন্নয়নের সঙ্গে তুলনা করতে পারব ;
মানব উন্নয়ন সূচকের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব ;
মানব উন্নয়ন সূচকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও উন্নয়নশীল কয়েকটি দেশের তুলনা করতে পারব;
বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের প্রেরিত রেমিটেন্স ও অর্থনীতিতে এর প্রভাব ব্যাখ্যা করতে পারব;
মানব উন্নয়ন সূচকের ভিত্তিতে দেশের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালনের মনোভাব অর্জন করব।
মোট দেশজ উৎপাদন ( Gross Domestic Product : GDP)
একটি দেশের অভ্যন্তরে দেশি বা বিদেশি নাগরিকদের দ্বারা প্রতি বছর উৎপাদিত সকল দ্রব্য ও সেবার মোট আর্থিক মূল্য হচ্ছে মোট দেশজ উৎপাদন (GDP)। জিডিপি হিসাব করা হয় মূলত একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির শক্তি বা সামর্থ্য বোঝার জন্য।
তবে দেশের কোনো ব্যক্তি যদি বিদেশে কাজ করে অথবা কোনো কোম্পানি যদি বিদেশে ব্যবসা করে দেশে টাকা পাঠায় সেই আয় মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন হিসাবে পরিগণিত হবে না অর্থাৎ জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হবে না। মূলত জিডিপি হচ্ছে একটি দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের আর্থিক মূল্য।
মোট জাতীয় উৎপাদন ( Gross National Product : GNP)
একটি দেশের নাগরিক নির্দিষ্ট সময়ে (সাধারণত এক বছর) যে সকল দ্রব্য ও সেবা উৎপাদন করে তার মোট আর্থিক মূল্য হচ্ছে মোট জাতীয় উৎপাদন (GNP)। অর্থাৎ একটি দেশের নাগরিক নিজ দেশসহ বিশ্বের যেখানেই চাকরি বা ব্যবসা করুক না কেন যখন তাদের অর্জিত আয় দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয় তখন তা মোট জাতীয় উৎপাদন হিসাবে বিবেচিত হবে। জিএনপি হিসাব করা হয় একটি দেশের নাগরিকদের অর্থনৈতিক অবদান বোঝার জন্য। যেমন—কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিদেশে চাকরি বা ব্যবসা করে অর্জিত অর্থের যে পরিমাণ অর্থ বৈধপথে বাংলাদেশে পাঠায় তা বাংলাদেশের মোট জাতীয় উৎপাদনের অংশ হবে।
মাথাপিছু আয় ( Per Capita Income : PCI)
একটি দেশের মোট জাতীয় আয়কে সেই দেশের মোট জনসংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে মাথাপিছু আয় পাওয়া যায় । এর মাধ্যমে একটি দেশের মানুষের সার্বিক জীবনযাত্রার মান নির্ধারণ করা হয় । যে দেশের মাথাপিছু আয় যত বেশি সে দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান তত উন্নত এবং অর্থনীতি তত বেশি সমৃদ্ধ ।
যে কোনো দেশের কৃষি, শিল্প, সেবাসহ যাবতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের আয় বৃদ্ধি করা। জনগণের আয় বৃদ্ধি পেলে জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায় এবং দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির ফলে ধীরে ধীরে জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১০ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৯২৮ মার্কিন ডলার; যা ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছে ২০৬৪ মার্কিন ডলারে ।
একটি দেশ কতোটা উন্নত বা অনুন্নত তা বিচার করা হয় কতোগুলো সূচক বা মানদণ্ডের সাহায্যে। এই মানদণ্ডগুলো হলো দেশটির মোট জাতীয় উৎপাদন, জনগণের মাথাপিছু আয়, জীবনযাত্রার মান প্রভৃতি। এইসব দিক বিচারে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নতি লাভ করেছে। আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার প্রতি বছরই পূর্ববর্তী বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে যেমন আছে আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন তেমনি আছে প্রবাসে কর্মরত শ্রমিক ও অন্যান্য চাকরিজীবীদের অবদান। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক হিসাবে দেখা যায়, ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরে যেখানে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (GDP) পরিমাণ ছিল ৩,৭০,৭০৭ কোটি টাকা, সেখানে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এর পরিমাণ ২৭,৯৬,৩৭৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। (উৎস: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা- ২০২০ )
দেশের কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধির মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি। দেশে উৎপাদন বাড়লে জনগণের জীবনযাত্রার উপর তার প্রভাব পড়বে। দারিদ্র্য হ্রাস পাবে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে, বেকারত্ব হ্রাস পাবে। এর সঙ্গে যদি আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তবে প্রবৃদ্ধির সূচকে আমাদের দেশ অনেক এগিয়ে যাবে।
কাজ : জাতীয় উৎপাদন ও মাথাপিছু আয় ধারণা দুটি ব্যাখ্যা করো ।
বাংলাদেশে জাতীয় আয়ের উৎস হিসাবে আমরা অনেকগুলি খাতের নাম উল্লেখ করতে পারি। যেমন: কৃষি ও বনজ, মৎস্য, শিল্প, খনিজ, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সম্পদ, নির্মাণ শিল্প, পাইকারি ও বিপণন, হোটেল-রেস্তোরাঁ, পরিবহন ও যোগাযোগ, ব্যাংক-বিমা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ব্যবসা-বাণিজ্য, শুল্ক প্রভৃতি। এর মধ্যে আমাদের জাতীয় উৎপাদন ও আয়ের কয়েকটি খাত নিচে উল্লেখ করা হলো :
ক) কৃষি ও বনজ: খাদ্যশস্য, শাকসবজি ও বনজ সম্পদ এই খাতের অন্তর্ভুক্ত। ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে এই খাতের অবদান ছিল ১৩.০৯ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১.৪৭ শতাংশ। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই খাতের অবদান ছিল ১০.১৫ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩.১৫ শতাংশ ।
খ) মৎস্য খাত: ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ নদী ও অন্যান্য জলাশয় এবং সামুদ্রিক উৎস থেকে মাছ আহরণসহ দেশজ উৎপাদনে মৎস্য খাতের অবদান ছিল ৩.৬৮ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.১৮ শতাংশ। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই খাতের অবদান ছিল ৩.৪৯ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.২১ শতাংশ।
গ) শিল্পখাত: ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ছিল ১৯.০০ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১০.৩১ শতাংশ। পোশাক শিল্প, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সরবরাহ, খনিজ সম্পদ ও নির্মাণ শিল্প প্রভৃতিকে এই খাতের অন্তর্ভুক্ত করায় জাতীয় অর্থনীতিতে এই খাতের অবদান অনেক বেড়ে যায় । ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই খাতের অবদান ২৪.০৮ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৪.২০ শতাংশ ।
ঘ) পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্য: ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে জিডিপিতে এই খাতের অবদান ছিল ১৪.০৩ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.১৮ শতাংশ। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই খাতের অবদান ছিল ১৩.৯২ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮.১৪ শতাংশ।
ঙ) পরিবহন, সংরক্ষণ ও যোগাযোগঃ ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে জিডিপিতে এই খাতের অবদান ছিল ১১.৫০ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.২৭ শতাংশ। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই খাতের অবদান ছিল ১১.০১ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.১৯ শতাংশ।
চ) স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা খাত: ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে জিডিপিতে এই খাতের অবদান ছিল ১.৮৮ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪.৭৬ শতাংশ। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই খাতের অবদান ছিল ১.৮৯ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৬৬ শতাংশ। (উৎস: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা- ২০২০ )
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জিডিপির গুরুত্ব
এককভাবে ধরলে আমাদের মোট জাতীয় উৎপাদনে কৃষির অবদানই সর্বাধিক। তবে শিল্পের ভূমিকাও দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এছাড়া সেবা খাতসমূহও দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে। বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তি-নির্ভর। কৃষি, শিল্প, যোগাযোগ, সেবা প্রভৃতি খাতের উন্নয়নে প্রযুক্তির বিকাশকে কাজে লাগিয়ে আমরা সহজেই আমাদের জাতীয় উন্নয়নকে ত্বরান্বিত ও জাতীয় আয় বৃদ্ধি করতে পারি। সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের মধ্যে সমন্বয় ও আয়ের ভারসাম্য রাখা গেলে জনগণের জীবনমানের উন্নয়নেও তা সহায়ক হবে।
কাজ : বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধিতে যেসব খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি কর এবং খাতওয়ারি অবদানের বিবরণ দাও ।
মানব সম্পদ উন্নয়ন
মানুষ তখনই রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পদে পরিণত হয় যখন সে কিছু করতে পারে। কেউ শারীরিক শ্রম দিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য সম্পদ তৈরিতে সহায়তা করে আবার কেউ মেধা দিয়ে নতুন নতুন সম্পদ উদ্ভাবন করে সহায়তা করে থাকে। দেশের কৃষি, শিল্প বা সেবাখাতে উৎপাদন বৃদ্ধির কাজে যারা শ্রম ও মেধা দিয়ে কাজ করেন তারা নিজেদেরকে শ্রমশক্তিতে রূপান্তরিত করেন । শ্রমশক্তি সম্পন্ন মানুষকেই দেশের মানব সম্পদ বলা হয়। প্রতিটি অদক্ষ মানুষকে শ্রমশক্তি সম্পন্ন বা মানব সম্পদে পরিণত করাই হচ্ছে মানব সম্পদের উন্নয়ন। উপযুক্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, বাসস্থান, চিকিৎসা ও খাদ্যের সংস্থানের মাধ্যমেই মানব সম্পদের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। কোনো অদক্ষ মানুষ নয়, কেবলমাত্র দক্ষ মানুষই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। সুতরাং দেশের সকল মানুষকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞান লাভের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় দক্ষতা সৃষ্টি করতে হবে। দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করার জন্য সুস্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করতে হবে। অতএব চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ ও উৎপাদনমুখী সম্পদ হিসাবে গড়ে তোলাই মানব সম্পদের উন্নয়ন।
বাংলাদেশে মানব সম্পদ
উন্নয়ন ১লা জানুয়ারি ২০১৭ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ২৭ লক্ষ (এসভিআরএস ২০১৭, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো)। ২০১১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৯৭ লক্ষ ৭২ হাজার ৩৬৪ জন। বিবিএস পরিচালিত সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ, ২০১৬-১৭' অনুযায়ী ১৫ বছরের উপরে মাত্র ৬ কোটি ৩৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান ছিল। উক্ত শ্রমশক্তির শতকরা ৪০.৬ ভাগ কৃষি, ২০.৪ ভাগ শিল্প এবং ৩৯.০ ভাগ বিভিন্ন সেবাখাতে নিয়োজিত রয়েছে। মোট জনসংখ্যার ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ পুরুষ এবং ২ কোটি নারী কাজে নিয়োজিত রয়েছে। বাকী মানুষ সার্বক্ষণিক কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে তাদের মধ্যে ১৫ বছরের নিচের শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধ মানুষ রয়েছেন। (উৎস: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা- ২০২০ )
আমাদের দেশে সাক্ষরতার হার এখন দ্রুতগতিতে বাড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার ৭৩.৯ (উৎস: Human Development Reports 2020); ২০০৯ সালে এই হার ছিল ৫৪.৮%। দেশে স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও বাসস্থানের ব্যাপক সমস্যা রয়েছে। ফলে আমাদের বিপুল জনগণের দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। দারিদ্রের কারণে অনেক মানুষ তাদের সন্তানদের শিক্ষা ও খাদ্যের যোগান দিতে পারছে না । ফলে তারা দ্রুত দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হয়ে উঠতে পারছে না। আমাদের দেশের মানুষ দক্ষ জনসম্পদে পরিণত না হওয়ার কারণ ‘দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্র'। নিচের উদাহরণটি পড়লেই এ চক্রটি কীভাবে মানব সম্পদে পরিণত হওয়ার পথে বাধা তা পরিষ্কার হওয়া যাবে।
দরিদ্র লোকের পর্যাপ্ত খাদ্য থাকে না বলে দুর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়। তাই এরা কাজ পায় না বা করতে পারে না। ফলে আয় কম হয়। কম আয়ের কারণে সঞ্চয় করতে পারে না বা কম সঞ্চয় করে। সঞ্চয় কম হলে মূলধন কম হয়, ফলে বিনিয়োগ কম হয় । বিনিয়োগ কম হলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না তাই অনেক লোকই কাজের অভাবে দরিদ্রই থেকে যায়। সুতরাং দারিদ্র্যের এই চক্রাকার আবর্তের কারণে মানব সম্পদ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে । তাই বাংলাদেশে মানব সম্পদ পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন জনসাধারণকে খাদ্যের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
কাজ : দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্র কীভাবে উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে ?
জিডিপি, জিএনপি এবং মাথাপিছু আয় ইত্যাদি হিসাবগুলোতে যে সমস্ত শ্রম বাজারে বিক্রি করা হয় না সেগুলোকে ধরা হয় না। ফলে একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর শ্রম জাতীয় আয়ের অংশ হিসাবে মর্যাদা পায় না যা প্রকারান্তরে মানুষে মানুষে অসমতা সৃষ্টি করে। যেমন, গৃহস্থালি দৈনন্দিন কাজে নারীরা যে শ্রম দেয় তা হিসাবের মধ্যে না নেওয়ায় একদিকে যেমন মোট জাতীয় উৎপাদনের প্রকৃত হিসাব পাওয়া যায় না, অন্যদিকে তা গৃহস্থালি কাজে নারীর শ্রমকে মূল্যহীন করে তোলে।
উপরোক্ত সমস্যাসহ আরও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে একটি দেশের মানুষ প্রকৃত বিচারে কেমন আছে তা জানার জন্য ব্যবহার হচ্ছে ‘মানব উন্নয়ন সূচক' (Human Development Index) ধারণা। এখানে নানান সূচক ব্যবহার করে দেখা হয় যে, একটি দেশের অর্থনীতি কতটা কল্যাণমুখী । কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সূচক হচ্ছে গড় আয়ু, গড় সামাজিক অসমতা, প্রসবকালীন মৃত্যুর হার, বেকারত্বের হার, দারিদ্র্যের হার, শিশুশ্রমের হার, কর্মহীন ও সামাজিকভাবে অসহায় হত-দরিদ্রের হার, বাল্যবিবাহের হার, বাল্য মাতৃত্বের হার, আয়ের বৈষম্যের হার, সাক্ষরতার হার, পরিবেশ বান্ধব টেকসই উন্নয়ন ইত্যাদি।
কোনো দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান কেমন তা বোঝার জন্য এ সংক্রান্ত কিছু নির্ধারক তথ্য প্রয়োজন যাকে সেগুলোর মানব উন্নয়নের সূচক বলা হয়। যেমন, জনগণের সাক্ষরতার হার কতো, ছাত্রভর্তির সংখ্যা বা হার কতো, তাদের আয় কতো, ব্যয় কতো, তারা কেমন বাড়ি ও চিকিৎসা পাচ্ছে, তাদের খাদ্য গ্রহণের অবস্থা কেমন ইত্যাদি । এ ধরনের বেশ কিছু সূচককে একত্রিত করে বলা হয় ঐ দেশ বা জনগোষ্ঠীর জীবন যাত্রার মান কেমন।
মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থা
বর্তমানে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, মোট জাতীয় উৎপাদন ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে আর্থ-সামাজিক খাতে বাজেটের ২০% বেশি ব্যয় করছে। ২০২০ সালের Human Development Report মোতাবেক মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৩ তম যা ২০১৪ সালে ছিল ১৪২ তম। সরকার শিক্ষার সকল স্তরে সমান সুযোগ সৃষ্টি ও শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষ ও যোগ্য মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়নসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০% মহিলা শিক্ষক নিয়োগের বিধি প্রবর্তনের ফলে মহিলা শিক্ষকের হার ১৯৯১ সালের ২১% থেকে বর্তমানে ৬৪.৯% উন্নীত হয়েছে। এছাড়া সরকার স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় প্রজনন হার ও মৃত্যু হার কমেছে, গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে, নবজাত শিশু ও মাতৃ-মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে, অপুষ্টির হার হ্রাস পেয়েছে।
বাংলাদেশে ২০১৬ সালে পরিচালিত সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপ অনুযায়ী ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে আয়ভিত্তিক দারিদ্র্যের হার ৩১.৫ শতাংশ থেকে ২৪.৩ শতাংশে নেমে আসে। অপরদিকে, ২০০৫ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে আয়ভিত্তিক দারিদ্র্যের হার ৪০.০ শতাংশ থেকে ৩১.৫ শতাংশে নেমে আসে। (উৎস: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা- ২০২০ )
সরকার গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি আনয়নের লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধা এবং হত-দরিদ্র বিশেষ করে বয়স্ক, দুঃস্থ নারী, প্রতিবন্ধী, এতিমসহ আরও অনেককে নগদ ভাতা ও বিনামূল্যে খাদ্য প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করছে। এর পাশাপাশি একটি বাড়ি একটি খামার, আশ্রয়ণ, গৃহায়ণ ইত্যাদি প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনায় উক্ত অর্থনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়ন ও সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের স্বীকৃতি পেয়েছে। মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে ২০১৫ সালেই বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। ২০১৮ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা এ ৩টি সূচকের যে কোনো দুটি অর্জনের শর্ত থাকলেও বাংলাদেশ তিনটি সূচকের মানদণ্ডেই উন্নীত হয়েছে। উন্নয়নশীল কয়েকটি দেশের সাথে মানব উন্নয়ন সূচকের নিরিখে বাংলাদেশের তুলনা করলেই আমরা এই অর্জনের যথার্থতা অনুধাবন করতে পারব।
কাজ : মানব উন্নয়ন সূচকের মাপকাঠিতে বাংলাদেশের অবস্থান নির্ণয় করো।
একটি দেশের মানব উন্নয়ন পরিস্থিতি নির্ণয় করা হয় : মাথাপিছু আয়, ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে স্কুলে ভর্তির হার, ১৫ বছরের অধিক বয়সের সাক্ষরতার হার, সঞ্চয়ের হার, চিকিৎসা খরচ, বসতির হার, ভোগ্যপণ্য ব্যবহারের খরচ, বেকারের হার, শিক্ষা খরচ, মাথাপিছু জাতীয় আয় (জিএনআই) ও প্রতিদিন ১.২৫ ডলারের নিচে জীবিকা নির্বাহকারী মানুষের সংখ্যা, জন্ম ও শিশু মৃত্যুর হার ইত্যাদি। নিচে উপস্থাপিত সারণি থেকেই একটি দেশের মানব উন্নয়ন পরিস্থিতি বোঝা যায় ।
আমরা নিচে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মানব উন্নয়ন সূচকের চিত্র তুলে ধরছি:
সারণি-১
সূচক | বছর | বাংলাদেশ | ভারত | পাকিস্তান | শ্রীলঙ্কা | মালয়েশিয়া | ইন্দোনেশিয়া |
সঞ্চয় (%জিডিপি) | ২০১০ | ২৬.২ | ৩৩.২ | ১৪.২ | ২৩.৭ | ২২.৪ | ৩১.০ |
২০১৯ | ৩১.৬ | ২৭.৫ | ১৪.০ | ২৭.১ | ২৩.০ | ৩১.৩ | |
সাক্ষরতার হার (১৫বছরের অধিক বয়সের) | ২০১০ | ৪৭.১ | ৬৯.৩ | ৫৫.৪ | ৯১.২ | ৯৩.১ | ৯২.৮ |
২০১৯ | ৭৩.৯ | ৭৪.৪ | ৫৯.১ | ৯১.৭ | ৯৪.৯ | ৯৫.৭ | |
বেকারত্বের হার (% শ্রমশক্তির) | ২০১০ | ৩.৮ | ২.৪ | ০.৭ | ৪.৯ | ৩.৩ | ৫.৬ |
২০১৯ | ৪.২ | ৫.৪ | ৪.৫ | ৪.২ | ৩.৩ | ৪.৭ |
উৎস: UNDP Human Development Data (1990-2019)
উপরের সূচকগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখি। ২০১০ সালে বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার (১৫ বছরের অধিক বয়সের) ছিল ৪৭.১%, ভারতে ৬৯.৩%, পাকিস্তানে ৫৫.৪%, শ্রীলঙ্কায় ৯১.২%, মালয়েশিয়ায় ৯৩.১% এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৯২.৮% । ২০১৯ সালে উক্ত হার বাংলাদেশে বেড়ে ৭৩.৯%, ভারতে ৭৪.৪%, পাকিস্তানে ৫৯.১%, মালয়েশিয়ায় ৯৪.৯% এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৯৫.৭% হয়েছে কিন্তু শ্রীলঙ্কায় খুব সামান্য বেড়েছে। অন্যান্য সূচকেও বিভিন্ন দেশে মানব উন্নয়নের চিত্র সারণিতে লক্ষ করো ।
২০২০ সালের Human Development Report অনুযায়ী মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৩ তম, ভারতের ১৩১ তম এবং পাকিস্তানের অবস্থান ১৫৪তম। বাংলাদেশে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল যেখানে ৭২.৬ বছর, ভারতে তা ৬৯.৭ বছর এবং পাকিস্তানে ৬৭.৩ বছর । আয়ভিত্তিক বৈষম্যের হার বাংলাদেশে ১৬.৬%, ভারতে ১৮.৮%, পাকিস্তানে ১৭.২%। মানব উন্নয়ন সূচকে লিঙ্গীয় বৈষম্যের হার, অতি দারিদ্র্যের হার, মোট জনসংখ্যা অনুপাতে কর্মসংস্থানের হার ইত্যাদি বিষয়গুলোও বিবেচনা করা হয়। (উৎস: UNDP Human Development Report 2020 )
বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে এই বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য' (Sustainable Development Goal) অর্জনে এগিয়ে চলছে।
কাজ : সারণি-১ অনুযায়ী বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মানব উন্নয়নের একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরো।
প্রবাসে কর্মরত নাগরিকদের স্বদেশে প্রেরিত অর্থকে রেমিটেন্স (Remittance) বলে । বিদেশে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী ও পেশাজীবীরা তাদের অর্জিত অর্থের একটা অংশ ব্যাংকের মাধ্যমে পরিবারের কাছে পাঠায়। এই অর্থ কেবল তাদের পরিবারের প্রয়োজনই মিটায় না, কিংবা তাদের জীবনযাত্রার মানই বাড়াচ্ছে না, নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের একটি বড় অংশ আসছে প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্স থেকে।
অর্থনীতিতে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশীদের প্রেরিত রেমিটেন্সের প্রভাব
বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, মিসর, লিবিয়া, মরক্কোসহ অনেক দেশে বাংলাদেশের শ্রমিক ও পেশাজীবীরা কাজ করছেন। একইভাবে নিকট ও দূর প্রাচ্যের মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোতেও বাংলাদেশের বহু মানুষ নানা পেশায় নিয়োজিত আছে। ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকাতেও বহু বাংলাদেশি চাকরি ও ব্যবসাসহ নানা ধরনের কাজ করছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ও বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের সংখ্যা ছিল ৪.৭৮ লক্ষ এবং তাদের পাঠানো অর্থের পরিমান (রেমিটেন্স) ছিল ১৮,২০৫.০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ ২০০৮ - ২০০৯ অর্থবছরে এই রেমিটেন্সের পরিমান ছিল ৯৬৮৯ মিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে ২০০৮ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রাপ্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২তম। ২০০৯ সালে তা ৮ম স্থানে উন্নীত হয়। এ সময় সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ছিল ২য়। বিশ্ব মন্দা পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় ধরনের কোনো সংকটের মধ্যে না পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রবাসীদের পাঠানো বিপুল অঙ্কের রেমিটেন্স। (উৎস: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২০ )
কাজ : রেমিটেন্স কীভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে ব্যাখ্যা করো।
আরও দেখুন...